১।
নিলয় ওর হাত ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে। সেকেন্ডের কাঁটাটা ঘুরছে। কিছুক্ষণ পর এটা বারোর কাছে আসবে। তারপর বারো পার হয়ে আবার ঘুরবে।এভাবে আর কতবার ঘুরলে মিনিটের কাঁটাটাও বারোর কাছে আসবে? হিসাবটা জানা জরুরী। কারণ তখনি পাঁচ তালার ছাঁদ থেকে লাফ দিবে নিলয়।ও ছাদের একটা কোনায় দাঁড়িয়ে আছে। এ জায়গাটুকুর রেলিং নেই। কেন নেই তা নিয়ে কখনও চিন্তা করে নি নিলয়। আজ হঠাত মনে হচ্ছে শ্রাবণকে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল। শ্রাবণদের বাসার ছাদ এটা। শ্রাবণের পাশের বিল্ডিঙ্গেই নিলয়রা থাকে। কিন্তু ওদের ছাদ মাত্র তিন তলা। তাই লাফ দেওয়ার জন্য এই ছাদটাই বেছে নিয়েছে নিলয়। আর দশ বার সেকেন্ডের কাটাটা এভাবে ঘুরে আসলে মিনিটের কাটাটা বারোর কাছে আসবে। তখন বাজবে ঠিক চারটা। আগ্রহ নিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে নিলয়। এক ডিগ্রী করে সেকেন্ডের কাটাটা এগিয়ে যাচ্ছে।
২।
আমি সবার মত না। সবাই যে জগতে বাস করে আমি সে জগতের বাসিন্দা না। আমার জগতটাকে আমার ডাক্তার বলেছে কল্পনার জগত। এ জগতের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই। এই অবাস্তব জগতকে সত্যি বলে মনে করাটা আসলে একটা রোগ। স্কিতজোফ্রেনিয়া। আমি একজন স্কিতজোফ্রেনিয়াক রোগী। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমার রোগটাকে শুধু শুধুই একটা খটমটে নাম দিয়েছে সবাই। সোজা ভাষায় আমি পাগল। এটা শিরিন আপাকে অনেকবার বলেছি আমি। শিরিন আপা প্রত্যেকবার ভীষণ রাগ করেছে, বলেছে “তুই পাগল হলে আমিও পাগল,” “কিন্তু তুমিতো আমার মত অবাস্তব জগত দেখ না। মাঝে মাঝে আমার অনেক ভয় হয় আপা জান। মনে হয় সবাই আমাকে মারতে আসছে। ওরা... আর কেউ ওদের দেখে না। আমিই দেখি।” শিরিন আপা মুখ গম্ভীর করে ফেলে। চুপ করে থাকে কিছুক্ষণ। আমার খুব খারাপ লাগে তখন। হঠাত করে শিরিন আপা হেসে ফেলেন, বলেন, “তোর ওই কবিতাটা বলতো।” আমি চোখ বন্ধ করে গড়গড় করে কবিতা আবৃতি করি। শিরিন আপা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকেন আমার দিকে। চোখ খুলে ওর মুগ্ধ দৃষ্টি দেখি। কবিতার থেকেও ভাল লাগে। মনে হয় আমি কেন সাধারন মানুষ হলাম না, অন্তত শিরিন আপার জন্য হতাম। শিরিন আপা বলে “ওষুধ ঠিক মত খাচ্ছিস তো নীল?” শিরিন আপা আমাকে নীল ডাকে। নীল ওর পছন্দের রঙ। আমি বলি “হ্যাঁ খাচ্ছি। কিন্তু ভাল লাগে না। বড্ড বাজে লাগে ওষুধ খাওয়ার পর। ঘুম আসে।” “তবুও খেতে হবে। তুই তোর প্রমিজ রাখবি নিশ্চয়ই।” শিরিন আপা বলে। আমি মাথা নাড়ি। আমি আগে আমার ওষুধ ফেলে দিতাম বেশির ভাগ সময়, সামনে কেউ না থাকলেই। শিরিন আপা একদিন আমাদের বাসায় এসে আমার ফেলে দেওয়া ওষুধ দেখে। ওর চোখ কেমন যেন ছলছল হয়ে যায়। আমাকে এসে বলে “নীল তুই আমার গাঁ ছুয়ে বল, তুই তোর ওষুধ ঠিক মত খাবি।” তখন থেকে আমি যতই খারাপ লাগুক ওষুধ খাই।
আমার বড় আপার সাথে শিরিন আপার বেশ খাতির। বড় আপা গম্ভীর ধরনের। আমার থেকে তিন বছরের বড়, শিরিন আপার বয়সী। কার সাথে তেমন কথা বলে না। শিরিন আপা আসলেই খালি ওর সাথে গুজুর গুজুর করে কিসব যেন বলে। সে ভীষন পড়ুয়া। শিরিন আপা প্রায়ই বলে “দেখবি অরু শেষটায় বইকেই বিয়ে করে ফেলবে” ওর কথায় আমরা দুইজনই হেসে উঠি।
অরু আপা যেমন পড়ুয়া তরু তেমনি ফাঁকিবাজ। ও তিন ভাই বোনের মাঝে সবার ছোট। ওকে আব্বা আর আপা সারাক্ষণ শাসন করে। আর ও আমার ঘরে এসে ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাঁদে। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। শান্তনা দিয়ে কিছু বলতে পারি না। তাই তরু নিজের মত কেঁদে আমার ঘর থেকে চলে যায়। আমরা তিন ভাই বোনই আব্বা কে ভীষন ভয় পাই। ছোটবেলায় আব্বা বেত নিয়ে আমাদের পড়তে বসাতেন। আমাকে প্রায়ই মারতেন না পড়ার কারনে। তরুটাও মার খেত। বছর শেষে রেসাল্টে অরু আপা এতো পড়েও কখনো ফার্স্ট হতে পারত না। ফোর্থ ফিফথ এই আটকে থাকত। তরুটা তো বহু কষ্টে পাস করত। আর আমি, ফার্স্ট হয়ে যেতাম কিছু না পড়েও। অরু আপা অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকত। আমার অসুখটা ধরা পরে মেট্রিক পরীক্ষার আগে, ক্লাশ টেনে থাকতে। হঠাত নাকি আমি রাস্তায় ছুটে যেতাম। যাকে দেখতাম তাকে মারতে যেতাম। আমাকে ঘরে বেধে রাখতে হত। আম্মা সারাক্ষণ মরা কান্না কাঁদতেন। আব্বা চিন্তিত মুখে ঘরের এমাথা থেকে ও মাথায় হাটতেন। তরু ভয়ে ভয়ে বাসায় ঘুরে বেড়াত। অরু আপাই সবচেয়ে শক্ত থাকত। বাসার রান্না বান্না থেকে শুরু করে সব করত ও। আমাকে ইঞ্জেকশন দিতে আসতেন একজন ডাক্তার। একগাদা ওষুধ দিয়ে যেতেন তিনি। তখন আমি আশেপাশে কাউকে দেখলে ভীষন ভয় পেতাম। যা দেখতে পেতাম তা আসলেই এই পৃথিবীর বাসিন্দাদের দেখতে পাওয়ার কথা না। কিন্তু আমি জানতাম এটা সত্যি। একা ভয়ে কুকড়ে থাকতাম। চিল্লাচিল্লি করতাম। এক দুই সপ্তাহের মাথায় আমি আবার সুস্থ মানুষ। অসুখের চিহ্ন হিসাবে চোখের নিচে কালি পড়ে যেত। আমার ফরসা গায়ের রঙ আরো ফ্যাকাসে হয়ে যেত। তখনও অবশ্য আমাকে সপ্তাহে একবার ডাক্তারের চেম্বারে যেতে হত। তিনি আমাকে নানা আকারের ছবি দেখাতেন। রঙ নিয়ে কিসব পরীক্ষা করতেন। আমার কথা শুনতেন, আর সব শেষে আমাকে প্রাণ পণ বুঝাতে চাইতেন যে আমি যা দেখি তা কল্পনা। পুরা ব্যাপারটাই হাস্যকর লাগতো তখন আমার। যা তিনি দেখতেই পান না, তা কি করে বলতে পারেন কল্পনা। আমি অবশ্য এটা কাউকেই কখনও বুঝাতে চাই নি। ডাক্তারকেও না। কারন আমি জানি জগতটা কতটা সত্যি। হয়তো এই পৃথিবীর জন্য নয়, অন্য কোন জগতের জন্য।
এই অসুখ নিয়েই আমি মেট্রিক দিলাম। বাসার সবার ধারণা ছিল খুব খারাপ করব পরীক্ষায়। কিন্তু আমি স্ট্যান্ড করলাম। সেকেন্ড হলাম পুরো ঢাকা বোর্ডের মাঝে। স্কুল আর পাড়ার সবাই আমাকে নিয়ে অনেক হইচই করল। কিন্তু বাসার সবাই ব্যাপারটাকে অন্য ভাবে নিল। আজব ভংগিতে আমার দিকে তাকায় সবাই। আম্মা এই অসুখটার পর আমার থেকে এম্নিতেই দূরে সরে গিয়েছিলেন। আমাকে অন্য বাড়ির মানুষের মত দেখেন। ঠিক মত কথা বলেন না। যেন আমাকে তিনি চেনেন না। রেসাল্টের পর তো তা আরো বেড়ে গেল। আব্বা আর অরু আপা এমন ভান করার চেষ্টা করল যেন কিছুই হয় নি। খালি তরু বেশ কয়েকদিন লাফালাফি করল। “ভাইয়া তোর ছবি পেপারে দিয়েছে। তুই এতো ভাল রেসাল্ট কি ভাবে করলি। কয়েকদিন পর তো তুই আমাকে বোন বলতে লজ্জা পাবি।” আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসতাম খালি। আমি তো নিজেও জানি না কিভাবে করলাম।
ছোট বেলা থেকেই আমি অনেক বই পড়তাম। মেট্রিক পরীক্ষা শেষে হওয়ার পর সেটা আরো বেড়ে গেল। তার মাঝে আমি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লাম। অনেক দিন ধরে অসুস্থ থাকলাম। প্রায় এক মাস। এই এক মাস বাসার সবার উপর নিশ্চয়ই অনেক ধকল গেছে। কিন্তু সুস্থ হওয়ার পর আমার আর তেমন সেসব মনে নেই। খালি মনে আছে আমি অনেক রঙের খেলা দেখতাম। এই রঙ গুলো আগে কখনো দেখি নি। কাউকে বোঝানো ও সম্ভব না এগুলো কেমন। আমি সুস্থ হওয়ার পরদিন লিখতে বসলাম। চোখের সামনে ওই রঙ গুলো দেখছি। কিন্তু অসুস্থতার মত না। যেন হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নের কথা চিন্তা করছি। মনে হল খাতার মাঝে রঙ গুলো ঢেলে দিতে পারতাম। আমি লিখতে শুরু করলাম। পুরো ঘোরের মাঝে চলে গেছি। লিখে যাচ্ছি। শেষ করে দেখি একটা কবিতা দাঁড়িয়ে গেছে। নিজের লেখা পড়ে আমি নিজেই মুগ্ধ। এত সুন্দর সৃষ্টি! আমি করলাম? এই লেখা গুলো কখনও কেউ পড়ে নি। তাতে কী? এই সৃষ্টির আনন্দতো আমি পেয়েছি।
স্কুলে আমার অল্প কিছু বন্ধু ছিল। কিন্তু মেট্রিকের পর আমি অসুস্থ হয়ে গেলাম। কারো সাথে তেমন যোগাযোগ ছিল না। খালি পার্থ প্রায়ই খোঁজ নিত আমার।সুস্থ হওয়ার পর আমার সাথে এসে গল্প করতো। আমাকে নিয়ে বাইরে যেত প্রায়ই। আমাকে বই কিনতে নিয়ে যেত। প্রায়ই দেখতাম বাবা আর অরু আপা পার্থর সাথে কথা বলছে, আস্তে আস্তে। হয়তো আমার অসুখ নিয়েই বলত। আমি তখন যেতাম না তাদের সামনে। পার্থর সাথে আমি অনেক কথাই বলতাম। কিন্তু তাও কি যেন একটা বলতে পারতাম না ওকে।
আমার ক্ষুদ্র জীবনে একটা বড় অলৌকিকত্ব শিরিন আপা। ওরা আমাদের পাশের বিল্ডিঙ্গের বাসায় ভাড়া নেয় আমি যখন কলেজে ভর্তি হই। বাসার সবাই অবশ্য অনেক ভাবনা চিন্তা করেছিল আমাকে আর পড়াবে নাকি। শেষ পর্যন্ত ভাল কলেজেই ভর্তি হলাম। তার তিন মাস পর শ্রাবণরা আসল। আসার পরদিন শ্রাবণ সাথে নিচে দেখা। পাড়ার সবাই পাশে মাঠে নানা খেলাধূলা করে। আমি না খেললেও প্রায়ই খেলা দেখি। সবার সাথে আমার কথাবার্তাও আছে। পারার সবাই আমার অসুস্থতার কথা জানে, কিন্তু সুস্থ থাকলে সেটা নিয়ে তেমন কথা বলে না কেউ। সেদিন মাঠে দেখলাম নতুন ছেলে। শোয়েব ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন আমার সাথে। ক্লাশ নাইনে পরে শ্রাবণ। বই পড়ার সখ। আমিও অনেক বই পড়ি শুনে বই দেখতে চাইল। ওকে নিয়ে বাসায় গিয়ে দেখি একজন অচেনা মেয়ে অরু আপার সাথে গল্প করছে। অরু আপা সাধারনত কারও সাথে তেমন কথা বলে না। আমি বেশ অবাক হলাম। শ্রাবণ আমার ঘরে এসে আমাকে জানালো সেটা তার বোন। সবার সাথে খুব সহজেই খাতির জমিয়ে ফেলে। বলল “ভাইয়া দেখবেন এখন প্রতিদিন বিকেলে শিরিন আপা আপনার বাসায় এসে বসে থাকবে আপনার বোনের সাথে গল্প করার জন্য।” ওর কথা বলার ধরন দেখে হেসে দিলাম আমি। আমি শিরিন আপাকে বলতে শুনলাম, “ওইটা তোমার ভাই নাকি? এমন ভাবে আমার দিকে তাকাল যেন ভূত দেখেছে।” অরু আপা হেসে কি যেন বলল। বই দেখানো শুরু করলাম আমি শ্রাবণকে।
এর দুইদিন পরে আমি আবার অসুস্থ হয়ে গেলাম। প্রবল ভয়ের জগতে থেকেই দেখতে পেলাম শিরিন আপা এসেছে আমাকে দেখতে। তাকে দেখে আমি গোঙ্গানো শুরু করলাম। অরু আপার গলা শুনলাম, “শিরিন চল। ও ঠিক হয়ে যাবে।” শিরিন আপা গভীর মমতায় আমার কপালে হাত রাখলেন। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।
সুস্থ হওয়ার পর তরু বলল শিরিন আপা নাকি প্রায়ই আমার পাশে এসে বসে থাকতেন। অরু আপা আমাকে বলল আমি যেন শিরিন আপার সাথে দেখা করি। আমার লজ্জা লাগছিল। তাও গেলাম। শিরিন আপা আমাকে দেখে হাসলেন। বললেন “এসো, বস, তোমাকে একটা কথা বলি?”
আমি মাথা নাড়লাম। “আমি তোমার কবিতার ডাইরী পড়েছি। কিছু মনে কর না। তোমার ঘরে দেখে কৌতুহল হল। প্রথম কবিতাটা পড়ে মনে হল সবগুলো না পড়লে জীবন বৃথা। তাই পুরোটা পড়ে ফেলেছি। তুমি রবীন্দ্রনাথের আমলে থাকলে রবীন্দ্রনাথ আর বিশ্বকবি হতে পাড়তেন না।” মুগ্ধ চোখে হাসল শিরিন আপা। আমি অবাক হলাম, আমার কবিতার প্রশংসা শুনে না, তার হাসি দেখে। কেন যেন মনে হল এমন একটা হাসি দেখার জন্যই আমি কবিতা গুলো লিখেছিলয়াম। এর পর থেকে আমি প্রায়ই তার কাছে যাই। কবিতা পড়ে শুনাই। আমার রঙের জগতের কথা বলি। শিরিন আপা অবিশ্বাসী ভঙ্গিতে মাথা নাড়েন না। অদ্ভুত চোখে তাকান না আমার দিকে। তার চোখে থাকে শিশুদের মত কৌতুহল।
আমি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিতে পারলাম না অসুস্থতার কারনে। ঘন ঘন অসুস্থ হতাম তখন। আর প্রায়ই জ্ঞান হলে দেখতাম শিরিন আপার মুখ। ভয়ের জগতেও ওর চোখের মমতা আমাকে নাড়া দিত। কিছু বলতে পারতাম না ওকে। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া হল না। পার্থ ওর পড়াশুনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেল। ওর অভাবটাও যেন মিটাত শিরিন আপা। আমাকে নিয়ে বাইরে যাওয়া, বই কিনে দেওয়ার কাজগুলো শিরিন আপাই করত।
একবার আমার অসুস্থ সময়ের কথা। এবার শিরিন আপার মুখ দেখলাম না অসুখের সময়। সুস্থ হয়ে শিরিন আপার কাছে গিয়েছি। শিরিন আপার মা কঠিন চোখে আমার দিকে তাকালেন, কাছে ডেকে বললেন, “নিলয় তুমি একটা বড় ছেলে। বাসায় আমার বড় মেয়ে আছে। ঘনঘন এবাড়িতে এলে লোকে কি বলবে। তুমি পাগল মানুষ বোঝ না। কিন্তু আর সবাইতো বোঝে।” আমি কি বলব ভেবে পেলাম না। বললাম, “খালাম্মা শিরিন আপার কাছ থেকে বই নিতে...” “তোমার শিরিনের সাথে আর কোন কাজ নেই। ওর সামনে বিয়ে। তুমি এ বাড়িতে আর এসো না।”
রাত তিনটা। আমি চোখের সামনে নানা রঙের খেলা দেখছি। এগুলো এজগতের না। আমি এ জগতের না। আমি সবার স্বাভাবিক পৃথিবীর মাঝে ভুল একজন মানুষ। কেন আমার জন্য শিরিন আপার বিয়ে ভেঙ্গে যাবে? কেন আব্বা আম্মা, অরু আপা আর তরুর স্বপ্নের রঙ্গে কেন আমার এই অসুস্থ জগতের রঙ মিশানো থাকবে? শিরিন আপা কেন সেই রঙের খোঁজে নিজের জীবনকে থামিয়ে রাখবেন? যেন সবাই এক ভিনগ্রহের প্রানীর কবলে আটকে আছে। সেই প্রানী আমার ভিতরে বাস করে। তাকে ধ্বংস করতে হবে। আমার খুব ভালোবাসার মানুষগুলোকে মুক্তি দিতে হবে। দিতেই হবে।
৩।
মিনিট আর সেকেন্ডের কাটা একসাথে বারোর কাছে এসে পৌচেছে। নিলয়ের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। ওর পুরো জীবনটাকে ও দশ মিনিটে দেখে নিয়েছে। আজব। কে বলে জীবনটা আসলে অনেক বড়?
নিলয় চার পাশে শো শো বাতাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছে। ও হারিয়ে যাচ্ছে কোন অতল গহ্বরে। ও রঙ দেখতে পাচ্ছে, অবাস্তব জগতের রঙ। কিন্তু এ রংটা ও আগে কখনো দেখেনি। এটাকেই কি কষ্টের রঙ বলে? প্রিয়জনদের ছেড়ে যাওয়ার, কে জানে, হয়তোবা হরিয়ে যাওয়ার কষ্ট। তার জগতের এ রং যেমন অবাস্তব, তেমনি হয়তো তার কষ্টটাও অবাস্তব।
২০ ফেব্রুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪